Posts Tagged ‘মেহেদী হাসান’


লিখেছেন: মেহেদী হাসান

প্রতিটি খাদ্যকণার জন্য আমরা কৃষকের কাছে ঋণী। তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমাদের জন্য ফসল ফলায়। অথচ মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে ফসলের নায্য দাম পায় না কৃষক। যার ফলে তাকে সবসময় অভাবঅনটনের মধ্যে থাকতে হয়। ‘কৃষক’ শব্দটি উচ্চারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের মনে উস্কখুস্ক চুল, কোটরের ভেতরে ঢুকে যাওয়া ঘোলাটে চোখ, ভাঙা চোয়াল ও কঙ্কালসার দেহের অবয়ব ভেসে উঠে। সমস্ত জাতির খাদ্য উৎপাদনের দায়িত্ব যাদের কাঁধে তারা কোনরকমে ধুঁকেধুঁকে বেঁচেবর্তে থাকে।

তবে সময়ে ঘাটাইলের পাকুটিয়া গ্রামের সেই কঙ্কালসার দেহ ও ঘোলাটে চোখের স্বত্বাধিকারী কৃষকের বাঁচার উপায়টুকুও যেন আর থাকছে না! বিদ্যুতখাতের কতিপয় দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি ও গ্রামের কিছু অসৎ লোকের যোগসাজশে ইরি ধানের মৌসুমে চরাক্ষেতগুলো পরিণত হয় কৃষকের মৃত্যুফাঁদে। (বিস্তারিত…)


লিখেছেন: মেহেদী হাসান

universe-humanityস্বামী বিবেকানন্দ মানব অস্তিত্বের ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে চিদাত্মা এবং আত্মার কথা বলেছেনএবং এদুটিকে তুলনা করেছেন সাগর এবং তার উত্তোলিত ঢেউয়ের সাথে। সাগর আর তার ঢেউ যদিও দুটি আলাদা অস্তিত্ব, তবুও ঢেউ যখন সাগরের সাথে মিশে গিয়ে একাকার হয়ে উঠে, তখন তাকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়, মানুষ একবার পঞ্চত্ব প্রাপ্ত হলে যেমন তাকে আর একক অস্তিত্বের আওতার মধ্যে ফেলা যায় না। বিবেকানন্দ চিদাত্মাকে ঈশ্বর এবং মানব চেতনাকে আত্মা হিসেবে অভিহিত করেছেন। তার বক্তব্যের সারমর্মটা অনেকটা এরকম, মানুষ যখন বেঁচে থাকে তখন সে আত্মা এবং যখন সে মারা যায় তখন আত্মার সকল বৈশিষ্ট্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চিদাত্মার সাথে একীভূত হয়; ঢেউ যেমন তার সকল নিজস্ব ধর্ম মুছে ফেলে সাগরের সাথে মিশে নিজেও সাগরে রুপান্তর লাভ করে। (বিস্তারিত…)


লিখেছেন: মেহেদী হাসান

The_Faces_of_Capitalism-1একবার ব্যবহার করেই ফেলে দিতে হয়, দ্বিতীয় বার ব্যবহারের উপযোগী থাকে নাএমন ধরনের পণ্যের উদ্ভাবন একমাত্র পুঁজিবাদের হাতেই হয়েছে। মানব সভ্যতার অন্য কোন ধরনের সমাজ ব্যবস্থায় এই ধরনের পণ্যের কোন অস্তিত্বই ছিল না। মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে বাজার দখল করার যুদ্ধে এই ধরনের পণ্য তার অন্যতম হাতিয়ার। এই প্রক্রিয়ায় সে আমাদের জনসাধারনের মধ্যেও জোরেশোরে এই “একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়ার” প্রবণতা চাগিয়ে তোলে।

যার ফলে আমাদের পরস্পরের মাঝখানে তৈরী হয় বিচ্ছিন্নতার বিশাল ফাটল এবং সমাজের অভ্যন্তরে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলে বিশৃঙ্খলা। এই বিচ্ছিন্নতার ভার সহ্য না করতে পেরে এবং বিশৃঙ্খলার ফাঁদে আটকা পড়ে আমরা জড়িত হয়ে পড়ি নানা ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রমে এবং সমাজে একে একে খুলে যেতে থাকে দুর্নীতি ও লুটপাটের সকল দ্বারমুখ। আপনাদের সকলে খুব ভালোভাবে অবগত থাকায়, আমাদের সমাজে নিয়মিত ঘটতে থাকা অপরাধী কার্যক্রমগুলোর ফিরিস্তি বর্ণনা করা এবং দুর্নীতি, লুটপাটের উদাহরণ হাজির করার বিশেষ প্রয়োজন নেই। (বিস্তারিত…)


ধর্মযুদ্ধের যুগে একজন স্বীকৃত প্যাগানবাদী, হাইপেশিয়া ছিলেন এমন একজন নারী, যিনি গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা এবং দর্শনের চর্চা করতেন

মূল: সারাহ জেইলিন্সকি

অনুবাদ: মেহেদী হাসান

অনুবাদকের উৎসর্গ: বর্তমান সময়ের হাইপেশিয়াদের

প্রবন্ধটি স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিনে ২০১০ সালের ১৪ মার্চ প্রকাশিত হয়

Hypatia-2৪১৫ অথবা ৪১৬ সালের একদিন, মিশরের আলেকজেন্দ্রিয়া শহরের রাস্তায় পিটার দ্য লেকটরের নেতৃত্বে খ্রিষ্টান চরমপন্থীদের একটা দল একজন নারীকে বহনকারী ঘোড়ার গাড়ী ঘিরে ফেলে এবং তাকে টেনেহিঁচড়ে বের করে একটি গীর্জায় নিয়ে তুলে, সেখানে তারা তাকে উলঙ্গ করে মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তার দিকে ছাঁদের টালি নিক্ষেপ করতে থাকে। এরপর তারা তার লাশ ছিন্নভিন্ন করে পুড়িয়ে ফেলে। কে এই নারী এবং কি ছিল তার অপরাধ?

হাইপেশিয়া ছিলেন প্রাচীন আলেকজান্দ্রিয়া শহরের সর্বশেষ মহান চিন্তাবিদদের একজন এবং নারীদের মধ্যে প্রথমদিককার একজন, যিনি গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা এবং দর্শনের পর অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা করতেন। যদিও তার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য তাকে অনেক বেশী স্মরণ করা হয়, তবে নাটকীয়তায় ভরপুর তার জীবনটি হচ্ছে এমন একটি কৌতূহলোদ্দীপক লেন্স, যার ভেতর দিয়ে আমরা ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক যুদ্ধের যুগে জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চার দুরবস্থার চিত্র দেখতে পাই। (বিস্তারিত…)


জোনাহ রাস্কিন

অনুবাদ: মেহেদী হাসান

প্রথম পর্বের পর

death-of-a-red-heroineরেড হিরোইন” প্রসঙ্গে বলতে গেলে, যে ডেথ অফ এ রেড হিরোইন উপন্যাসের শিরোনামে যে নির্দেশিত হয়েছে, প্রথম হতেই সে রহস্যময়, যতক্ষণ পর্যন্ত না একেবারে শেষের দিকে পাঠক তার সমন্ধে সত্যটি জানতে পারে। কোন সময়ই সে উপন্যাসে জীবন্ত অবস্থায় আবির্ভূত হয় নাযদিও তাকে ফ্লাশব্যাকে দেখানো হয়এমনকি তার মৃত্যুর পর পুলিশ তার নামের সাহায্যেও তাকে শনাক্ত করতে পারে নি। তার ময়না তদন্তে বের হয়ে আসে যে, নিহত হওয়ার অল্পকিছুক্ষণ পূর্বে সে যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হয়েছিল। উপন্যাসটির প্রথম উত্তেজনাকর লাইনটিতে, জিয়ালং বলে, লাশটি পাওয়া যায় ১৯৯০ সালের ১১ মে বিকেল ৪৪০ মিনিটে, পশ্চিম সাংহাই থেকে প্রায় বিশ মাইল দূরবর্তী বেইলী ক্যানেলের বহির্মুখে। পরবর্তী বাক্যে সে পুলিশ বাহিনীর সদস্য গাও জিলিং নামের চেনের একজন সহকর্মী এবং পুরাতন বন্ধুর সাথে পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দেয়। তৎপরবর্তীতে একটা লম্বা অনুচ্ছেদে, জিয়ালং একের পর এক উল্লেখ করতে থাকে, “একটি পারমানবিক পরীক্ষা কেন্দ্র”, “সাংস্কৃতিক বিপ্লব” এবং “সাংহাইতে একটি আমেরিকান কোম্পানী” এর কথা। (বিস্তারিত…)


জোনাহ রাস্কিন

অনুবাদ: মেহেদী হাসান

qiu_xiaolongকিউ জিয়ালং অতিপ্রজ এই চীনা উপন্যাসিক ১৯৫৩ সালে সাংহাইতে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৮ সাল হতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করে আসছেন তিনি লাল শব্দটির এবং লাল রঙটির প্রতি বিশেষ রকম মোহ সৃষ্টি করেছেন, তবে তা হঠাৎ করে নয়, যখন থেকে তিনি লাল চীন সমন্ধে লেখা শুরু করেছেন। শিরোনামে লাল অন্তর্ভূক্ত তার নব্য ধারার তিনটি উপন্যাসঃ ডেথ অফ এ রেড হিরোইন (২০০০), হোয়েন রেড ইজ ব্ল্যাক (২০০৪), এবং রেড মান্দারীন ড্রেস (২০০৭)। এই তিনটি বইয়ের সবকটাতেই, মূল চরিত্রটি হচ্ছে একজন সংবেদনশীল, কবিতা প্রেমিক, তৎসত্ত্বেও কঠিন মানসিকতার পুলিশ ইনস্পেক্টর যে সাংহাই পুলিশ ব্যুরোতে কাজ করে; মাসিক বেতনভোগী হিসেবে এবং ফ্রীল্যান্স ব্যক্তিগত গোয়েন্দা হিসেবে ভাড়ায় নয়। (বিস্তারিত…)


সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন আভিভা শেন

২০১২ সালের এপ্রিলে স্মিথসনিয়ান ম্যাগাজিনে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়।

অনুবাদ: মেহেদী হাসান

Pete-Seeger-concert১৯৬০ সালের মার্চ মাসে ম্যাইনে প্রদেশের ব্রুনসিক শহরের বওডিয়ন কলেজে, একটি ক্যাম্পাস বেতার কেন্দ্র পিট সিগারের একটি কনসার্ট রেকর্ড করে। আটটি রীল থেকে রীল (reel-to-reel) ফিতা সেই রাতকে ধারণ করে আছে যা এখন একটি টুসিডি সেট এ প্রতিস্থাপিত হয়ে, এপ্রিলের ১৭ তারিখে স্মিথসোনিয়ান ফোকওয়েস রেকর্ডিংস থেকে বের হয়েছে। ১৯৬০ সালের বওডিয়ন কলেজ কনসার্টে, তার আঞ্চলিক কনসার্টগুলোর মধ্যে অন্যতম, সিগার পরিবেশন করেন সেই গানগুলোর প্রাথমিক ভার্সন যেগুলো এই কয়েক বছরের মধ্যে পুরো মানব জাতিকে সম্মোহিত করে ফেলেছে, যুদ্ধবিরোধী সেই গানটিও অন্তর্ভূক্ত “ফুলগুলো সব কোথায় গেল?” স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিনের আভিভা শেনের সাথে আলোচনায় এই ব্যাপারগুলোর উপর আলোকপাত করেন প্রয়াত লোকসঙ্গীত শিল্পী পিট সিগার। (বিস্তারিত…)


লিখেছেন: মেহেদী হাসান

art-22ছেড়িডা, প্রত্যেকদিন ভোর বেলা আমাদের সকলের ঘুম ভাঙ্গার আগে বিছানা ছাড়ে। বাথরুমে ঢুকে পড়ে চটজলদি সেরে নেয়, ঘুম থেকে উঠা পরবর্তী গাম্ভীর্য আঁকা মুখে দাঁড়ায় কিচেন বেসিনের সামনে; বাসনকোসন, হাড়িপাতিলে একশ লেবুর শক্তিওয়ালা ডিস ক্লিনার মেখে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে। তারপর মেঝেতে পিঁড়ি পেতে বসে শুরু হয় তার ময়দা ডলা। চাকতির উপর রাখা ময়দার গুলতি, তার ঝুঁকে ঝুঁকে বেলনা চালানোয়, ছড়ানো গোলাকৃতি লাভ করে। খুন্তি হাতে উঠে দাঁড়ালে, গ্যাস চুল্লির উপরে রাখা তাওয়ার চতুর্পাশ দিয়ে বের হওয়া আগুনের অনবরত স্পন্দিত জিহ্বার আঁচে তার ফর্সা মুখমণ্ডল ধীরে ধীরে বাতাসের ছোঁয়া লাগা কচুর ডাটির কষের মত লালচে হয়ে উঠে, এসময় তার চোখদুটোও যেন ঘামে ভিজে যায়। (বিস্তারিত…)


মূল: জোনাহ রাস্কিন

অনুবাদ: মেহেদী হাসান

The Iron Heelনষ্ট সময় ভাল লেখকদের দমিত করে, তবে তা তাদেরকে অবশ্য উৎসাহিতও করে থাকে। বইয়ের দোকান ও লাইব্রেরীগুলোতে নতুন ও ইদানীং আবির্ভূত হওয়া বইগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে। প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াকার বুশ প্রশাসন কর্তৃক গণস্বাধীনতা (civil rights) ও মানবাধিকারের উপর ভয়ানক আক্রমণ, অন্তত আর কিছু না হোক, বই প্রকাশকে বেগবান করেছে, ফিকশন এবং নন ফিকশন উভয় ধরনেরই, আমেরিকান গণতন্ত্রের ক্ষয়সাধন এবং সাম্রাজ্যবাদের দিকে তাড়িত বোধ করাকে দোষারোপ করে। জ্যাক লন্ডন বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে জনপ্রিয় আমেরিকান লেখক, যে জন্মগ্রহন করে ১৮৭৬ সালে, আমেরিকার জন্ম শতবার্ষিকীতে, এবং মারা যায় ১৯১৬ সালে, আমেরিকা বিশ্বযুদ্ধে প্রবেশের ঠিক একবছর পূর্বে আমেরিকার বিশ্বযুদ্ধে প্রবেশে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। বাস্তবিকপক্ষে, কেউ একজন হয়ত অতি উৎসাহী হয়ে লন্ডনকে প্রতিষ্ঠাতা জনক হিসেবে অভিহিত করবেন রাজনৈতিক দমনপীড়ন সমন্ধীয় সমকালীন সাহিত্যের, এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হল, হেনরি গিরক্সের দ্য এমার্জিং অথরিটারিয়ানিজম ইন দ্য ইউনাইটেড স্ট্যাটস, ম্যাথু রথস্কিল্ডসের ইউ হেভ নো রাইটস, ক্রিস হেসেসের আমেরিকান ফ্যাসিস্টস, রবার্ট কেনেডির ক্রাইম এগেইন্সট ন্যাচার এবং ফিলিপ রথের ২০০৩ সালে উদ্বেগ সৃষ্টিকারী উপন্যাস দ্য প্লট এগেইন্সট আমেরিকা। নিশ্চিতভাবেই এমন আরো অনেক কিছু আছে যা এই ভূখন্ডকে আরো অনেক বেশী আওতাভূক্ত করে। (বিস্তারিত…)


লিখেছেন: মেহেদী হাসান

smash_the_patriarchyউপরের শিরোনাম দেখে অনেকেই হয়ত চমকে উঠবেনকিভাবে, কিভাবে এটা সম্ভব!

বলছি, একে একে গুটিকতক

প্রথমেই বলে নেই পুরষতান্ত্রিক সমাজের প্রথা মেনে বিয়ে করাটা আমার কাছে খুবই ন্যাক্কারজনক ও অমানবিক একটা কাজ বলে মনে হয়। কেন মনে হয়? কারন হলবিয়ে হচ্ছে এমন একটি প্রথা যা পুরুষ কর্তৃক নারী শোষণের অনেক বড় হাতিয়ার বা বিস্তৃত একটা ক্ষেত্র এবং আদিম সমাজে নারীর ঐতিহাসিক পরাজয় প্রক্রিয়ার সমান্তরালে এই প্রথার আবির্ভাব যেখানে পুরুষের উত্তরাধিকারকে সুনির্দিষ্ট করার জন্য নারীকে একগামী হওয়ার কড়া নির্দেশ প্রদান করে এবং বিপরীত ক্ষেত্রে পুরুষের জন্য রয়ে যায় সমাজে চালু থাকা নারীর গণিকাবৃত্তি এবং পুরুষের বহুবিবাহের ফলে সামষ্টিক যৌনকাজের বিস্তৃত পরিসর। (বিস্তারিত…)