abstract_rev-6দ্বিতীয় মৃত্যু

—————————–

কোনো নষ্ট যোনির কষ্টে আমি জন্মাই রোজ।

ওরা মানুষকে কথা দেয়, শুয়োরকে কমলা লেবু।

কি করে লুকাবে ব্যবছেদে পড়ে থাকা মৃতদেহের ভিড়,

পথ আটকে ভিখারির মতো জানান দেবে শিকারির স্মৃতি।

এক একটা পতাকার তলায় মুড়ে ফেলো লক্ষ জীবন।

খোসা ছাড়ানো লেবুর উপর ভিন ভিনিয়ে উড়ছে মাছি,

থরে থরে সাজানো করটি সম্মিলিত জাতিপুঞ্জে

ছড়িয়ে পড়া আলোর মধ্যে বেঁধে দেওয়া অন্ধকার গণ্ডি।

মত্ততা আড়াআড়ি ভাসতে ভাসতে নীল হয়ে যায়,

নাকি বুর্জোয়া জঠরে ভেঙে চুরে যাবে দ্বিতীয় মৃত্যু।।

———————————————————————————————————————————-

.

যুদ্ধ কত চমৎকার!

———————————————

যুদ্ধ কত চমৎকার! উৎসুক! এবং নিপুণ!

খুব ভোরে জাগিয়ে দেয় সাইরেনগুলোকে

দ্রুত পাঠিয়ে দেয় অ্যাম্বুলেন্স বিভিন্ন স্থানে,

বাতাসে দোলাতে থাকে মৃতদেহগুলো

আহতদের জন্য বিছিয়ে দেয় স্ট্রেচার,

বৃষ্টির সমন জারি হয় মায়ের চোখে,

খুঁড়তে থাকে পৃথিবী, ধ্বংসের নীচ থেকে

খুঁজে নিয়ে আসে অপার্থিব অধিকার,

কিছু প্রাণহীন চকচকে উজ্জ্বলতা কিছু দায়সাড়া প্রাণটুকু,

শিশুদের মনে যুদ্ধ রেখে যায় অনেক প্রশ্ন,

ঈশ্বরের বিনোদনের জন্য আকাশে ফাটায় মিসাইল,

শস্যক্ষেতে রোপন করে মাইন সংগ্রহ করে ফোসকা আর ছিদ্র,

যুদ্ধ পরিবারগুলোকে অনুপ্রাণিত করে দেশান্তরী হতে,

ধর্মযাজকদের পাশে দাঁড়িয়ে অভিশাপ দেয় শয়তানকে,

যুদ্ধ দিনরাত কঠিন পরিশ্রম করে যায়,

অত্যাচারী শাসকদের লম্বা ভাষণে

সেনা নায়কদের বুকের মেডেলে

কবিদের নতুন বিষয় দেয়,

নতুন উৎসাহ দেয় কৃত্রিম অঙ্গ তৈরীর শিল্পে,

মাছিদের জন্য সরবরাহ করে খাদ্য,

ইতিহাসে সংযোজিত করে নতুন নতুন অধ্যায়,

শিকারি এবং শিকারের মধ্যে সাম্যতা রক্ষা করে,

প্রেমিকাদের শেখায় চিঠি লিখতে,

যুবতী স্ত্রীদের শেখায় অপেক্ষা করতে,

অনাথদের জন্য গৃহ নির্মাণ করে,

কফিনের গায়ে নামগুলোকে সজীব রাখে,

যারা কবর খোঁড়ে তাদের রোজগারের ব্যবস্থা করে,

যুদ্ধ অদ্বিতীয় ভাবে কঠিন পরিশ্রম করে যায়,

তবু কেউ একটা প্রশংসা সূচক বাক্য ব্যবহার করেনা যুদ্ধের জন্য।।

———————————————————————————————————————————-

মূল: ওয়ার ওয়ার্কস হার্ড

ইরাকি কবি দুনিয়া মিখাইল

————————————————————————

.

আগুন জ্বলতেই হবে

————————————————–

যন্ত্রণাগুলো ধারণ করেছে পর্বতের আকার,

এবার এই হিমবাহকে গলতেই হবে।

এই হিমালয় থেকে গঙ্গাকে নির্গত হতেই হবে!

আজ এই দেওয়াল, কাঁপে পর্দার মতো;

কিন্তু শর্ত ছিল কিসের?

কাঁপিয়ে দেবো ভিত্তি এই রাষ্ট্রযন্ত্রের।

প্রত্যেক রাজপথ, প্রত্যেক আলপথ, প্রত্যেক শহর

প্রত্যেক গ্রামে আন্দলিত মৃত্যুর হাত।

এই প্রত্যেক মৃত্যুকে নিয়ে মিছিলে হাঁটতেই হবে।

বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা উদ্দেশ্য নয় আমার,

লক্ষ্য আমার বদলাতে হবেই এই পরিস্থিতি।

সঞ্চয় করে নবতম উদ্যম,

আমার বুকে নয়তো তোমার বুকে

যেখানেই জ্বলুক, আগুন জরুরি হলো

মশাল জ্বলে থাকা চাই।।

————————————————————————

মূল: আগ জ্বলনি চাহিয়ে

ভারতের হিন্দি কবি দুষ্যন্ত কুমার

————————————————————————

.

সীতার জন্য

—————————–

মৈথুনের পর শূন্য এ বুকে কেঁদেছি দুজনে;

ঠোঁট দিয়ে পান করেছি তোমার নোনা জলের ধারা।

কতটা ক্ষার ঢেলেছি তোমার শরীরে বুঝিনি আগে,

এর পর তুমি চলে যাবে তোমার পুরুষ রাষ্ট্রের দখলে।

অন্তিম চাঁদের গায়ে লেগে থাকবে দুকলি গান,

I know I’m not your lover

I’m just a station on your way

সীতা, অনিবার্য কারণে আমি ভালোবেসেছি অন্ধকার;

আর্যতত্বের আড়ালে যখন বৃদ্ধা আমার পৃথিবী

বারে বারে ফিরে এসেছি তরুণ কল্পনার প্রতিফলনে,

ক্ষুধার্ত উপজীবেদের মাঝখানে পাতালের কীট বলে!

তোমাকে ছেড়ে দিয়েছে তোমার দখলদারী করা রাষ্ট্র;

তবু তুমি বুলিয়ে দেবেনা হাত ত্রিশূল বীক্ষত আমার বুকে,

আরো একটা ধ্বংসের পর দুদিকে

দাঁড়িয়ে কাঁদব দুজনে!

——————————————————–

ছবি: কুর্দি শিল্পী দেলোয়ার ওমর

মতামত জানান...

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.