লিখেছেন: পাইচিংমং মারমা
মুশকিল কোষা গঞ্জে শাফা সাইফুল আদবে নেওয়াজ শাহ কলন্দর শাহ সুফি হযরত মোহাম্মদ সোলায়মান শাহ চিশতী (রঃ ) একজন সুফি সাধক। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় তাঁর মাজার। প্রতি বছর চৈত্র সংক্রান্তির সময় হাজার হাজার মানুষ বাসে, লড়িতে, ট্রাকে করে তাঁর ঔরসে যায়। আমিও একবার গিয়েছিলাম। সেখানে সারারাত থেকেছি। দেখলাম হাজার হাজার মানুষ কেউ শুয়ে কেউ বসে, অনেকে দল বেঁধে কেউ কেউ দলছুট হয়ে, কেউ গাঁজা খেয়ে আর কেউ ভাত খেয়ে ‘হায় সুলেমান, হেই সুলেমান’ করছে। কারো কারোর চোখ নিভু নিভু, যেন একটা ঘোর নিয়ে ঘুরছে… তবু মাথা ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে তারা সোলেমান শাহের নাম নিচ্ছে দমে দমে।
বাংলাদেশের মাটিতে ইসলাম এসেছিলো সুফিদের হাত ধরে। কতো পীর, কামেল, আউলিয়ার আস্তানা এদেশে।
বুজুর্গেরা বলে এটা নাকি বেশুমার অধর্মের যুগ। হিন্দুরা বলে কলিযুগ। এখন ধর্মের নামে বেচাকেনা হয়, ধর্মের জন্য বেচাকেনা হয়, ধর্মকে আধ্যাত্মিক প্যাকেজে পুরে বেচাকেনা হয়। মানুষের অন্ধবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে পীর কামেল নাম ফেঁদে ফাঁদে ফেলা হয় মানুষকে।
মানুষের ধর্মবিশ্বাসকে রাজনীতিতেও ব্যবহার করা হয়। ভোটের আগে তাই ‘নৌকার মালিক তুই আল্লাহ’, ‘ধানের শীষে বিসমিল্লাহ্’ শোনা যায়। জামাত তো আল্লাহ–খোদার ডিলারশিপ নিয়েই রাজনীতি করে। ভোটের আগে আগে চোর, ছ্যাঁচ্চোড়, বদমাশ হয়ে যায় জনদরদী, বিশিষ্ট সমাজ সেবক, গরিব–দুঃখীর বন্ধু ইত্যাদি। পীরজাদার নামের আগে যেমন অনেকগুলো বিশেষণ থাকে তেমনি ভোটের আগেও একগাদা বিশেষণ জুটিয়ে নেন ভোটপ্রার্থী। তারপর হায় সুলেমান, হেই সুলেমান জিকিরের মতো লাউড স্পিকারে একঘেঁয়ে গলায় সেই প্রার্থীর বিশেষায়িত নাম শোনানো হয় ভোটারের কানে। রাজনৈতিক দর্শনে অন্ধ মানুষ যদিও এটা বুঝে যে ‘সব ঝুট হ্যায়’ তবু সেই প্রার্থীকে ভোট দিয়েই পীরের সমান মর্যাদায় ক্ষমতায় বসায়। অনেকে কিসসুই বোঝে না– কে তার মগজ নিয়ন্ত্রণ করে তা না বুঝে ব্যালটে ভোট ভেট দেয়।
ধর্ম দিয়ে আমাদের বর্তমান সভ্যতার অসভ্যতাকে যদি ব্যাখ্যা করা হয় তাহলে তা ভুল। ভগবান নয়, রাজনীতি–অর্থনীতি–রাষ্ট্রনীতিই মানুষের জীবন–মরন নিয়ন্ত্রণ করে। চালের দাম বিশ টাকা হবে নাকি পঞ্চাশ টাকা? ১০–১৫ বছর পর আমার ভিটায় আমি থাকবো নাকি সেখানে সেটেলারদের সেটলমেন্ট হবে সবই রাষ্ট্রের অর্থনীতি আর রাষ্ট্রনীতি দ্বারা নির্ধারিত হয়।
আমাদের পাহাড়ের রাজনীতি খুব জটিল কিছু ক্যালকুলেশান মেনে চলে। আমার মনে হয় যে আমাদের, মানে আদিবাসীদের মনঃস্তত্ত্ব আমাদের চাইতে শাসকগোষ্ঠীই ভালো বুঝে। শাসকের প্রত্যেকটা চালে আমরা ধরা খাই। এই যেমন ভোট;
তা যে কোন ভোটই হোক– জাতীয় বা স্থানীয় এখানে অনেক ফ্যাক্টরের একটা হচ্ছে কম্যুনালিজম। শাসকেরা আমাদের চেহারার একজন এজেন্টকে পার্লামেন্ট নির্বাচনে দাঁড়া করায়। আমরা ‘আমাদের লোক’ ভেবে ছিল মেরে আসি আর পাঁচ বছরের জন্য গোয়া মারা খাই।
কম্যুনিটির মধ্যেও কমিউনিটির চিন্তায় ভাগ আছে– ত্রিপুরারা চাকমাকে ভোট দেবে না, মারমারা জেএসএস–ইউপিডিএফ কে চাকমাদের পার্টি ভাবে, চাকমারা ত্রিপুরাদের উপরে ক্ষুদ্ধ … এরকম নানান সব প্যাচাল এবং ক্যাচালের পর দেখা যায় শাসকের পছন্দের প্রার্থিই নির্বাচিত হয়ে যায়।
এটা ক্যামনে হয়?
সেটেলাররা মোটামুটি সবাই একিভূত ভোটব্যাংকের রিজার্ভ ভোট। তাদের ভাগ্যনিয়ন্তা, খোদা–ভগবান হচ্ছে আর্মি আর তাদের ফেভারেবল দল। বিএনপির স্রস্টা জিয়াউর রহমান তাদের এখানে নিয়ে এসেছিলেন তাই তারা মূলত বিএনপিই করে, গুটিকয়েক হাওয়া বুঝে নৌকার পাটাতনে গিয়ে উঠে।
নানান সুবিধা যেমন টেন্ডার, রেশনের কারবার, কর্তৃত্ব, ক্ষমতা, সুবিধার জন্য তারা আওয়ামীলীগ করে তবে তা সংখ্যায় কম। তারা তাদের দখলবাজী বাড়াতে এবং স্টেট পলিসি বাস্তবায়ন করতে এক হয়েই কাজ করে। মাসে মাসে গুচ্ছগ্রামের মুরুব্বিরা ক্যাম্পে গিয়ে আর্মি অফিসারের সাথে মিটিং করে। নির্বাচনে তাদের ভোট একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামনের দিনে তারাই মূল ফ্যাক্টর হয়ে যাবে। তারাই ঠিক করবে কে তাদের নেতা হবে আর কিভাবে প্রান্তিক আদিবাসীদের প্রান্তের ওপারে ঠেলে দেওয়া হবে।
যেখানে অস্তিত্ব টেকার লড়াই করা দরকার সেখানে গাঁজাখোর পীরভক্তের মতো এখানকার ‘শিক্ষিত মধ্যবিত্ত’ পাহাড়িরাও নির্বাচনী জিকির মাহফিলে শরীক হয়ে যায়। এবারের খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাচনে আমাদের মারমা কমিউনিটির একজন প্রার্থী ছিলেন। বিএনপির টিকেট নিয়ে তিনি সেটেলারের ভোট টেনেছিলেন। আমাদের মারমা কমিউনিটি শিক্ষায় কিছুটা এগোলেও যুগ–বাস্তবতার দীক্ষায় এখনো সামন্ত যুগেই রয়ে গেছে। তো সেই মারমা কমিউনিটির প্রার্থীকে জেতানোর জন্য মারমারা বেদম খেটেছিলো, ‘হ্যাঁ দাদা! আমাদের প্রার্থী। দেখছেন না আমাদের ছেলেমেয়েরা চাকুরি পাচ্ছে না… আমাদের উন্নয়ন হচ্ছে না… চেয়ারে আমাদের লোক থাকলে অনেক লাভ হবে। জাতকে জাতে তুলতে হলে জাতের লোক দরকার!’
আমি মাকে জিজ্ঞেস করলাম জাতের লোকটা কেমন জাতের লোক?
মা প্রশ্ন দিয়ে উত্তর দিলেন, “তুই লর্ড ক্লাইভের গাধা চিনিস?”
আমি মায়ের কাছে জগত ও জীবন বোঝার বড় চ্যাপ্টারটা পড়েছি। আমরা সবাই ‘উন্নয়ন’ নামের স্বর্গের সিঁড়িতে উঠতে নির্বাচনের সময় লর্ড ক্লাইভের গাধাকে বিশেষায়িত করে জিকির করি। গাঁজাখুরি ঘোরে পীরভক্তের মতো আমরা জিকির করেই যাই আর ওদিকে শাসকের নিয়ম, শোষকের শোষণ, নিপীড়কের নিপীড়ন পাঁচ বছর পর পর বাড়ে। নির্বাচনেই যদি কাজ হতো তাহলে আমরা কিভাবে আজ এই অবস্থায় পড়লাম??? তার মানে তো সরকার বা দল নির্বিশেষে সবাই আদতে রাষ্ট্রীয় এথনিক ক্লিনজিং পলিসির বাস্তবায়ন করে চলেছে। তাদের ব্যানার আলাদা, প্রার্থীর নাম আলাদা কিন্তু মন্ত্র এক। “নৌকা–পাল্লা–ধানের শীষ সব সাপের একই বিষ”।
তাদের মন্ত্র হচ্ছে, কমিউনিটির ভিত্তিতে ভাগ করো আর শাসন করো। দলাদলী–খুনোখুনীর রাজনীতিতে পাহাড়িদের দলগুলোকে ব্যস্ত রাখো। মধ্যবিত্তকে উন্নয়নের গাঁজা খাওয়াও আর সাধারন জুমিয়া পাহাড়িদের প্রার্থী–পীরের মুরিদ বানাও। এবার সবাইকে জিকির করিয়ে পীর বানাও। পীর কি করবে? পীর যে গদিতে বসে সেই গদির মালিকের হুকুম তামিল করবে। তার মানে রাষ্ট্রের এথনিক ক্লিনজিং পলিসি বা উপজাত ধ্বংসের নীতি বাস্তবায়ন করবে।
কেউ বুকে হাত রেখে বলুক আমাদের পাহাড়–উপত্যকা ভালো আছে। যদি বলে আমি তাকে আফিমখোর বলবো নতুবা ধান্দাবাজ বলবো। সেটেলারদের সেটলমেন্ট, পরিকল্পিতভাবে পাহাড়ি নারীদের ধর্ষন, আদিবাসীদের ভূমি বেদখল– উৎখাত, জাতিগত আক্রমন লেগেই আছে। এভাবে মানুষ বাঁচে? আর আমরা উন্নয়নের নেশায় বুঁদ হয়ে নির্বাচনের প্রার্থী পীরের জিকির করেই যাচ্ছি। নির্বাচনে ভোট দিয়ে যদি আমাদের ভাগ্য বদলাতো তাহলে এখনো আমরা সব হারানোর ভয় নিয়ে বেঁচে আছি কেন?
এত্তগুলো শিক্ষিত মুর্খ… সব কয়টা নিরক্ষরদের সাথে সমান তালে জিকির করে! তাদের মধ্যে আবার বিদেশী ডিগ্রিওয়ালাও আছে!
কোনটা আগে দরকার? স্বাভাবিক জীবন আর স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি?? নাকি উন্নয়ন???
এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো পাহাড়িদের প্রতিনিধিত্বশীল দল নির্বাচিত হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনেও তারা ভালো করেছেন। এবার আমরা হয়তো অন্য কিছু আশা করতে পারি। এবার তাঁদের অগ্নি–পরীক্ষা।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত মানুষের রাজনৈতিক কুশিক্ষা দূর করার দায়ভারটাও কিন্তু রাজনৈতিক দলেরই। মানুষের রাজনৈতিক চিন্তায় স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি আনা বা মানুষকে পাল্টাতে হলে তাঁদেরও পাল্টাতে হবে– হ্যাঁ এটা তাঁদের মানতেই হবে। তাঁদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি না পাল্টালে রাজনীতি পাল্টাবে না, মানুষও পাল্টাবে না। এখানকার মানুষ খুব অদ্ভুত! অস্ত্বিত্বের সাথে জড়িত প্রশ্ন নিয়ে তারা ভাবে না (কারন তাদের ভাবানো হয় না)। তাদের Perception management, mind distraction, psychological manipulation করে ঘোরের জিকিরে রাখা হয়। অশিক্ষায় ডুবিয়ে রাখা হয়। মারমারা বলে “ত্রিপুরাদের কাছ থকে শিখতে হবে, তারা দ্যাখেন যে যাই দল করুক কিন্তু নিজের জাতের উন্নয়নে সবাই একাট্টা।” ত্রিপুরারা বলে, “চাকমারা খুব আগ্রাসি, হিংসুক, দখলবাজ–সব চাকুরির কোটায় নিজেরা নিজেরা ভোগ করে ফেলে। খুব রেসিস্ট এরা– দেখা হলেই চাকমা ভাষায় মাতে!” চাকমারা বলে, “ত্রিপুরারা খুব চাকমা বিদ্বেষী। সব চাকুরি–সুবিধা নিজেরা নিজেরা খেয়ে ফেলে। মারমাগুলান গু খায়, ভুদাই!!!”
একবারও কেউ ভাবে না তাদের এসব কে ভাবাচ্ছে !!!
এদিকে আমরা যত দলের ব্যানারে বিভক্ত হই, জাতিসত্তার ভিন্নতায় বিভক্ত হই, এলাকায় এলাকায় বিভক্ত হই, ধর্মে এবং কর্মে– বিশ্বাসে এবং অপবিশ্বাসে বিভক্ত হই ততই রাষ্ট্র বা শাসকগোষ্ঠির লাভ। তারা এটাই চায় যে আমরা যেন প্রকৃত শত্রু চিনতে না পারি আর নিজেরা নিজেরা ভাগাভাগি হয়ে সংখ্যালঘু থেকে আরও লঘুতর হয়ে যাই।। আমাদের প্রকৃত শত্রু তো এই রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রব্যবস্থা যা আমাদের এই দেশ থেকে উৎখাত করতে বিরামহীনভাবে Ethnic cleansing Policy বাস্তবায়ন করে চলেছে। মিলিটারিদের দিয়ে রাষ্ট্র যে শোষন–নিপীড়ন চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক জনসম্পৃক্তির আন্দোলন করতে
এইসব ভোট চাওয়া দলগুলো কোন কর্মসূচি বা লড়াই–সংগ্রামের ঘোষনা কি দিয়েছে?
এই সেটেলারদের কেন এখানে নিয়ে আসা হয়েছে তা কারোর অজানা নয় অথচ কই কেউ তো তাদের অত্যাচার নিয়ে একটা কথাও সংসদে বলে না! কেন? শান্তি–সম্প্রিতি–উন্নয়ন নষ্ট হবে তাই? এরকম শ্মশ্মানের শান্তিতে বাঁচার চেয়ে লড়ে মড়া কি শ্রেয়তর নয়? যে সেটলাররা আদিবাসীদের মাটি কেড়েছে, প্রাণ কেড়েছে, ধর্ষন করেছে তাদের সাথে কিসের সম্প্রীতি?? যে উন্নয়ন একটা ভুঁইফোড়, সুবিধাবাদী, নির্জীব, ভন্ড মধ্যবিত্তের জন্ম দিচ্ছে এই উন্নয়ন কি আসলেই উন্নয়ন নাকি আসলে ‘অপারেশান শান্তকরন’ এর ফলাফল???
কে ভাববে এসব নিয়ে? কে বলবে?? কোন রাজনৈতিক দল বলছে???
যদি কেউ বলে থাকে আমি মনে করি আমাদের সেই দলই করা উচিৎ–তাকেই ভোট দেওয়া উচিৎ।
নির্বাচনমুখী রাজনীতি মানে আপোষকামীতা। ভোটের অংক মেলাতে গিয়ে ঘাতকের সাথে কোলাকুলি করা যে কিনা দুদিন পর আমার পিঠে ছুড়ি মারবে। এটা এমন রাজনীতি যা মানুষের অধিকারবোধকে মেরে দিয়ে সুবিধাবাদের প্রলোভনে ভুলায়। দিনকে দিন সেটলারদের অত্যাচার বাড়ছে। আদিবাসীদের পাহাড়ের উপর তৈরি করা তাদের গুচ্ছগ্রামের আয়তন বাড়ছে। তারা পাশের আদিবাসীদের জমির দিকে হাত বাড়াচ্ছে। কেবল খাগড়াছড়িতেই গত মাসের ১৫ তারিখ থেকে আজ পর্যন্ত তিনজনকে তারা ধর্ষন করেছে। কোনটারই বিচার হয়নি, হবে না। ধর্ষকেরা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেই আশির দশকের গোড়ায় যখন তাদের নিয়ে আসা হয়েছিলো আমাদের নিজের মাটিতে সংখ্যালঘু বানানোর জন্য তারপর থকে বিরামহীন ভাবে তারা আমাদের অস্তিত্বের হুমকি হয়ে বুকে চেপে বসেছে। পরিস্থিতি এমন যে তারা থাকলে আমাদের মাটি ছেড়ে পালাতেই হবে–এর কোন অন্য রাস্তা নেই। কিন্তু কই কেউ তো বলে না সেটেলারদের তাদের নিজের জায়গাতে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলে না। কেন বলে না? কেন???
তাহলে যে প্রশ্ন আমাদের অস্তিত্বের সাথে জড়িত সেটা নিয়ে কেউ ভাবে না? কেউই না?? যারা এই সেটেলারদেরকে তাদের আগের জায়গাতে পাঠানোর কথা বলে না তারা কিভাবে আমাদের স্বার্থ রক্ষার রাজনীতি করতে পারে???
রাষ্ট্রশক্তি এবং কায়েমী মহলের সাথে আঁতাত করে, রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের মুহুর্তে নিরব থেকে রাষ্ট্রের পলিসি এবং এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী এমপি/জনপ্রতিনিধি দিয়ে আমরা কি করবো? তাঁরা কি আদতেই আমাদের প্রতিনিধি নাকি নিপীড়কের দাসানুদাস? এরাই আবার ভোটের সময় “অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর” বনে যায়।
জাতীয়তাবোধে সুড়সুড়ি দিয়ে, উন্নয়নের মোদক খাইয়ে, কোটি কোটি টাকা ছিটিয়ে, সাবমেশিনগানের নল দেখিয়ে হয়তো ভোট টানা যায় কিন্তু সেই ভোটারের চিন্তা পাল্টানো যায় না। পাহাড় হোক বা সমতল–
ভোটার ম্যানিপুলেশানের রাজনীতির বিপরীতে আরেকটা রাজনীতি আছে– মানুষের মুক্তির রাজনীতি। ভোটের জন্য মানুষকে বিভক্ত করার রাজনীতি নয়, মানুষের মনুষ্যত্ব এবং মানবতার মন্ত্রে একই মানববন্ধনে দাঁড়াবার রাজনীতি। তাঁদের রাজনীতি যদি সেই রাজনীতি না হয় তাহলে সময়ের প্রয়োজনেই সেই রাজনীতির অভ্যুত্থান ঘটবে যে রাজনীতি আমাদের অস্তিত্ব বাঁচানোর প্রতিরোধ সংগ্রাম করে এবং একইসাথে প্রাণ, প্রতিবেশ, সংস্কৃতি, মনুষ্যত্ব রক্ষা এবং সভ্যতার বিকাশ করতে লড়াই করে। আমি সেই রাজনীতি নিয়ে ভাবছি। বেঁচে থাকলে যা ভাবছি তা আরেকদিন বলবো।।