লিখেছেন: নীলিম বসু
“মননের দিক দিয়ে আমি হতাশাগ্রস্ত,
আর ইচ্ছার জোরে আশাবাদী।” – আন্তোনিও গ্রামসি
আকস্মিক ধাক্কা অনেকটা প্রশমিত এখন। রাগ আর যন্ত্রণা কমা উচিত নয়, কমেওনি আশা করি। প্রাথমিক ধাক্কায় অনেকেই আমরা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘকে (আরএসএস) সরাসরি আক্রমণ করা দরকার বলে গলা ফাটিয়েছি। যথেষ্ট যৌক্তিকতা আছে তার। কিন্তু যারা মাঠে নেমে কাজ করার চেষ্টা করেন, তারা জানেন যে, বিষয়টা কতোটা কঠিন। আরএসএস রণবীর সেনা নয়, যে তাকে প্রত্যক্ষ আক্রমণ জনসমর্থন পাবে।
একটা উদাহরণ নেওয়া যাক। কোনো এক মফস্বল অঞ্চলে যে মানুষটি সবার প্রতিদিনের প্রয়োজনে এগিয়ে আসেন, সৎ মানুষ হিসেবে সবার কাছে প্রিয়। তার সাথে একটু গভীরভাবে মেলামেশায় জানা গেলো তিনি আরএসএস কর্মী! সমস্যাটা এই জায়গায়। আরএসএস–এর সামাজিক ভিত্তি এক সময়ের কমিউনিস্ট কর্মীদের মতো! আরো সমস্যা হলো বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে এবং ভারতজুড়ে বেশিরভাগ জায়গাতেই কমিউনিস্ট কর্মীদের সামাজিক ভিত্তি খুব কমে গেছে, বা নেই; যার ওপর দাঁড়িয়ে আরএসএস–কে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া সম্ভব। সেটা না থাকলে আরএসএস–কে প্রত্যক্ষ আক্রমণ করতে গেলে বিষয়টা ব্যাকফায়ার করার সম্ভাবনা থাকছে বিশালভাবে। কিছু তথ্য দেওয়া যাক, আরএসএস–এর সামাজিক ভিত্তি নির্মাণের কাজগুলো নিয়ে। এইবার বন্যার সময় আরএসএস–এর ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) রিলিফ ক্যাম্পের জোয়ারে ভাসিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা, বিভিন্ন নামে আরএসএস রক্তদান শিবির থেকে ফ্রি হেলথ ক্যাম্প চালিয়ে চলেছে প্রতি মাসেই, সান্ধ্য স্কুল, স্পোর্টসও রয়েছে নিয়মিত কাজের মধ্যে। আর এসবের সাথেই মিশে রয়েছে ‘সোস্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং’। এই সমস্ত সামাজিক কাজকর্মের মধ্য দিয়েই প্রচার করা হচ্ছে প্রধানত কয়েকটি বিষয়, ১) রামের ‘পুরুষোত্তম’ তত্ত্ব; ২) ব্রাক্ষণ্যবাদী চতুর্বর্ণ ব্যবস্থা; ৩) অহিন্দু, মূলত ইসলাম বিদ্বেষ; ৪) মোদি হিস্টিরিয়া। আর এই প্রচার বাঁধা থাকছে ‘আদর্শ ভারতীয়ত্বের’ ন্যারেটিভে।
(বিস্তারিত…)