লিখেছেন: শিহাব ইশতিয়াক সৈকত
প্রসঙ্গঃ সারা বাংলা ছাত্র সংসদ
১৯৯১ সাল থেকে ভারতে গ্লোবালাইজেশনের হাওয়া বইতে থাকায় আর্থ–সামাজিক ক্ষেত্রে বিপর্যয় আরো দ্রুতগামী হয়েছে। গত দশকের মাঝামাঝি থেকে এই হাওয়া ঝড়ে পরিণত হয়। কর্মী সংকোচন, বেসরকারীকরণ, গণহত্যাসহ গ্লোবালাইজেশনের একাধিক বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠে ‘মরূদ্যান’ বাংলায়। আক্রমণ যত তীব্র হয়েছে, জনগণ তত বেশি করে আন্দোলনে নেমেছে, ঘটে গেছে একের পর এক গণ–আন্দোলন। ২০০৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এই সময়টাকে গণ–সংগ্রামের পূনর্জাগরণ বলা যেতে পারে।
সিঙ্গুর থেকে শুরু, তারপর নন্দীগ্রাম, ভাঙ্গরসহ একাধিক জায়গায় জমি বাঁচাবার আন্দোলন, কালোবাজারির বিরুদ্ধে আন্দোলন, পরবর্তীকালে আত্মমর্যাদা, বিকল্প উন্নয়ন ও সামাজিক কাঠামোর আন্দোলন– লালগড় আন্দোলন গড়ে উঠে। স্বাভাবিকভাবেই এই সমস্ত আন্দোলনে সামনের সারিতে ছিল ছাত্ররা। জনগণ ‘নেতা’– দের থেকে ছাত্রদের বেশি বিশ্বাস করে। তাই ২০১১ এর আগে বাম ফ্রন্ট সরকার গরীব, নিপীড়িত মানুষের আন্দোলনকে নারকীয়ভাবে দমন করার সাথে সাথে নিপীড়িত গণ–মানুষের আন্দোলনের সমর্থক, প্রচারক ছাত্রদের উপর একাধিকবার হুমকি দিয়েছে, আক্রমণ করেছে। আর এই হুমকির সামনে দাঁড়িয়ে ছাত্ররা বারবার কলকাতার রাজপথে নেমেছে, পুলিশের সন্ত্রাস তথা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, ফাঁস করেছে একের পর এক সরকার ও রাষ্ট্রীয় দালাল মিডিয়ার অপপ্রচার। এর জন্য তারা গ্রেপ্তার হয়েছে, মার খেয়েছে ভাড়াটে গুন্ডাদের হাতে।
কিন্তু ২০১১ এর পর বাম ফ্রন্ট সরকারকে হটিয়ে গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসা মমতার সরকারের সময়ও অবস্থার কোন পরিবর্তন হলনা। বাম ফ্রন্ট আমলের মতই এই সরকারের সময়েও ছাত্ররা পথে নেমেছে ভোটের প্রতিশ্রুতিমত রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি, নিজের দেশের জনগণের উপর সামরিক অভিযান বন্ধের দাবী, সিঙ্গুর এ জমি ফেরত এর দাবী, পুলিশের সন্ত্রাস বা বিশ্ববিদ্যলয়ে অর্ডিন্যান্স জারি করে ছাত্রদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের প্রতিবাদ জানাতে। পুরনো বাম ফ্রন্ট আমলের মতো এ আমলেও ছাত্ররা সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। আর গ্লোবালাইজেশনের নীতিগুলোকে বিনা বাধায় প্রয়োগ করতে গেলে আগে ছাত্রদের মুখ বন্ধ করা প্রয়োজন; তাই শুরু হয়ে গেল হুমকি দেয়া। এবার একেবারে সংগঠন–প্রতিষ্ঠানের নাম ধরে ধরে মূখ্যমন্ত্রী হুমকি দিলেন ছাত্র সংগঠনগুলোকে, সেই সাথে অধ্যাপকদের। ‘ছাত্র সংগঠনগুলোর সাথে মাওবাদী যোগাযোগ’, ‘মাওবাদীদের সাহায্য’ ছাড়াও মেয়েদের ‘ইজ্জত, অপহরণ’, ‘পুরুলিয়ার হোটেলে শুধুমাত্র খেয়ে এক লাখ টাকা বিল!!!’, অপহরণ, খুন সহ একাধিক কিছু সুলভ মিথ্যা অভিযোগ আনেন। (বিস্তারিত…)